• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||

রাণীনগরে বাণিজ্যিকভাবে কবুতর খামারে লিটনের মুখে হাসি 

প্রকাশ:  ০৯ জানুয়ারি ২০২২, ২০:০৫
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর রাণীনগরের রাতোয়াল গ্রামের লিটন নামে যুবক বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন সৌখিন কবুতরের খামার। ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো, লালন-পালন ও বড় করা পর্যন্ত সকল শ্রম স্বামী-স্ত্রী মিলেই দেন। অনেক প্রচেষ্টার পর খামারের পরিধি বড় করে ব্যবসায় সফলতা এনেছেন তিনি। তার এই সৌখিন কবুতরের খামার দেখে শিক্ষিত বেকার যুবকরাও খামার গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

জানা গেছে, উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের রাতোয়াল গ্রামের ফজলার রহমানের ছেলে লিটন ছোট বেলা থেকেই পশু-পাখি হাসমুরগী ও কবুতরকে খুব পছন্দ করতেন। সেই সুবাদে তার বাবা স্কুলে পড়ালেখা করার সময় ১ জোড়া কবুতর লিটনকে কিনে দেয়। সেখান থেকে পারিবারিক ভাবে স্বল্প পরিসরে কবুতরসহ কয়েক প্রজাতির পাখি পালন শুরু করেন লিটন। লেখাপড়ার পাশাপশি কবুতরের প্রতি সময় বেশি দেওয়ার কারণে বাবা-মায়ের বকুনিও খেতে হয়েছে তার। এত কিছুর পরও সে পিছুটান দেননি। ১৯৯৮ সালে কলেজে পড়ালেখা অবস্থায় বাবার দেওয়া সে ১জোড়া দেশি কবুতর থেকে আজ প্রায় শতাধিক প্রজাতির কবুতর ও পাখি রয়েছে। তাদের জাত ভেদে নাম বলা হচ্ছে, বিউটি হুমার, সৌখিন কিং, পোটার বল, তুড়িবাজ, হাউসিজন, লাক্কা, সিরাজিসহ নানা জাতের কবুতর। আর মুরগী রয়েছে সিল্কি জাতের। সারি সারি খাচায় শোভা পাচ্ছে লিটনের খামারের কবুতর। তাদের হাক-ডাকে মুখরিত হয়ে আছে লিটনের বাড়ি। বাড়ির ২য় তলায় খামারটি তৈরি করায় বাহির থেকে আশা কোন দর্শনার্থীর প্রবেশের সুযোগ খুবই কম। তারপরও বাড়ির পাশ দিয়ে গেলে কবুতরের বাকবাকুম ডাকসহ পাখির কিচির-মিচির শব্দ শোনা যায়।

বর্তমান তার খামারে কবুতরসহ পাখি রয়েছে যা বাজার মূল্যে প্রায় ১৩ লাখ টাকা। হরেক রকম কবুতরগুলে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি কারকদের মাধ্যমে সে কিনে এনেছেন। এখানে এক জোড়া কবুতরের দাম প্রায় লক্ষাধিক টাকার মতো। কোন খাঁচায় ডিম, কোন খাঁচায় সদ্য প্রস্ফুটিত বাচ্চা আবার কোন খাঁচায় বেড়ে উঠা বাচ্চা দেখা যাচ্ছে। মা কবুতর নিজেদের খাবার পাশাপাশি বাচ্চাদের খাওয়াতে ব্যস্ত। মায়ের মমতায় ভরা এ যেন অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। তার খামার এখন লাভজনক অবস্থায় আছে। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকার মতো আয় করছেন বলে খামার মালিক লিটন জানান। এই খামার থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার পাখি প্রেমী মানুষ এসে কবুতর ক্রয় করে নিয়ে যায়। লিটন বলেন কবুতরের খামার খুবই লাভজনক। সৌখিন পাখি পালনকারীদের জন্য কবুতরের খামার একটি সম্ভাবনার নতুন দিক হিসেবে দ্বার উন্মোচন করতে পারে। তাই শিক্ষা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে এই ধরনের কবুতরের খামার সৃজনে মনোযোগ দিলে দেশে বেকারের হান অনেকটাই কমতো। আবার অনেকেরই নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হতো।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের উপ-সহকারি কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ) সুবির চন্দ্র সরকার জানান, লিটনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা খামারই উপজেলায় একমাত্র পাখির খামার। এখানে নানা জাতের দেশি বিদেশি কবুতর ও পাখি আছে। তার শখের বসে শুরু করলেও এই খামারটি এখন দিনদিন বাণিজ্যিক ভাবে প্রসার ঘটছে। আমাদের পক্ষ থেকে সকল প্রকার কারিগড়ি সহযোগীতাসহ ওষুধপত্র দিয়ে থাকি। আমরা প্রতি মাসে তার খামারে দুই বার পরিদর্শন করে পাখিগুলোরর সুস্থ্যতার জন্য নানা ধরণের দিক নির্দেশনা প্রদান করে থাকি। উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের সহযোগীতায় মোলায় অংশগ্রহণ করায় তাকে পুরস্কৃতও করা হয়েছে। সে একজন সফল খামারি।


পূর্বপশ্চিমবিডি/জিএস

রাণীনগর,কবুতর,নওগাঁ

সারাদেশ

অনুসন্ধান করুন
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত
close